স্ফুলিঙ্গ
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১৭ অক্টোবর, ২০১৪, ০৬:৩০:০৩ সন্ধ্যা
সারা রাত কলেজের পরীক্ষার খাতা কেটে সেই ভোর চারটায় ঘুমাতে গেছে মাহতাব। কাল শুক্রবার। ভেবেছে বারটা পর্যন্ত একটানা ঘুমাবে। ঘন্টা দুই ঘুমিয়েছে কেবল, তখনি কণা ওকে ডাকতে থাকে।
: অ্যাই, ওঠতো। দেখ মা কি পাঠিয়েছে!
প্রচন্ড রাগ নিয়ে বউয়ের দিকে তাকায়। ঘুমজড়ানো লাল চোখ পিটপিট করে বউয়ের হাসিমুখ দেখে। আরো রাগ বাড়ে। বিছানার সামনের মেঝেতে পড়ে আছে জিনিসগুলো। বেশ বড়সড় একটি প্লাষ্টিকের ম্যাট, সাদা পলিথিনে ভর্তি আতপ চাল, কোরবানির গরুর গোশত- কিছু কাঁচা, হাড়িতে রান্না করাও দেখল বেশ খানিক। চোখ পুরোটা মেলে এগুলোর সাথে আচারের ডিব্বার পাশে মুড়ি এবং খইয়ের টিন দেখতে পেলো।
খুব ঠান্ডা স্বরে কণাকে জিজ্ঞেস করে,
: এগুলোর সাথে আমার জন্য তোমার বাবার পুরনো দু'একটা জামাও দেয় নাই?
মাহতাবের অতি শীতল কথাগুলো কণার ভিতরে কোথায় যেন ওলটপালট করে দেয়। সে মুহুর্তে জ্বলে উঠে।
আগুন জ্বলে দু'দিকেই।
# অণুগল্প
বিষয়: সাহিত্য
১২৩০ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসলেও আপনি তো বুঝবেন না আপনি আর মেয়ে না ।
তবে এটা বুঝবেন যখন শুশুর বাড়ির লোকজন আপনাকে অবহেলা করবে তখন কিরকম কষ্ট লাগে ।ফেরারী মন ভাইয়া @
আফরা ইতোমধ্যে আপনাকে ভাবার্থ বুঝিয়ে দিয়েছেন।
পারিবারিক জীবনে সহাবস্থান এবং একে অপরকে বুঝতে পারাটাই আসল বিষয়।
আর নারী পুরুষের জন্য অলংকার স্বরুপ হলেও সে তার সম্পত্তি নয়। তাই জীবনের প্রতিটি স্তরেই নারীর উপর নিজের ইচ্ছাকে চাপিয়ে দিয়ে তাকে অবনমিত/অবদমিত করা রাখাটাও ঠিক নয়। নারী পুরুষের বন্ধু এবং একই পথে পথ চলার সাথী। সেভাবেই চিন্তা-চেতনায় তাকে ট্রীট করা উচিত।
ধন্যবাদ অনুভূতি রেখে যাবার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আমি হলে গল্পটা এভাবে শেষ করতাম-
৬নং মন্তব্যে দেখুন
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
সুন্দর বলেছেন।
অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক শুভেচ্ছা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সুন্দর অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আমি হলে গল্পটা এভাবে শেষ করতাম-
৬নং মন্তব্যে দেখুন
অণুগল্পগুলো এমনই হবে। শেষ হয়েও শেষ হবে না, পাঠককে ভাবনা-চিন্তার সুযোগ দিবে। পাঠককে লেখকে পরিণত করাটাই অণুগল্পের আসল কাজ।
এই গল্পে মাহতাবের বলা কথাটাই গপের টার্ণিং পয়েন্ট। এগুলো স্বামী-স্ত্রীর ভিতরের দৈনন্দিন খুনসুটি- যা দুজনের ভালোবাসাকে আরো দৃঢ় করবে। স্ফুলিঙ্গ সাময়িক, যা দুজনকেই পুড়িয়ে খাঁটি করে তুলবে। সারা রাত ব্রেইনের উপরে প্রচন্ড চাপ, এরপর গভীর ঘুমের ভিতর থেকে ডেকে তোলায় চিন্তা-ভাবনা আসল স্টেজে ছিলনা বিধায়ই এমন উত্তর দিয়েছে সে। তবে এখানে ভালোবাসা নেই এই ধারণাটা আমার মনে হয় কেউ ভেবে বসলে সেটা ভুল হবে। ভালোবাসাই প্রিয়জনকে সামান্য অবহেলায় জ্বলে উঠতে সাহায্য করে, আবার ভালোবাসাই কথার স্ফুলিঙ্গে জ্বলে উঠে ভালোবাসার সম্পর্ককে মজবুত করে।
এই গল্পের পরিসমাপ্তি পাঠকের কল্পলোকে ঘটবে। এক একজনের নিকট এক একভাবে।
সুন্দর অনুভূতি রেখে যাবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আমি হলে গল্পটা এভাবে শেষ করতাম-
৬নং মন্তব্যে দেখুন
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ.. @ আবু সাইফ ভাইয়া।
এগুলো স্বামী-স্ত্রীর ভিতরের দৈনন্দিন খুনসুটি- যা দুজনের ভালোবাসাকে আরো দৃঢ় করবে। স্ফুলিঙ্গ সাময়িক, যা দুজনকেই পুড়িয়ে খাঁটি করে তুলবে। সারা রাত ব্রেইনের উপরে প্রচন্ড চাপ, এরপর গভীর ঘুমের ভিতর থেকে ডেকে তোলায় চিন্তা-ভাবনা আসল স্টেজে ছিলনা বিধায়ই এমন উত্তর দিয়েছে মাহতাব। তবে এখানে ভালোবাসা নেই এই ধারণাটা মনে হয় ভুল। ভালোবাসাই প্রিয়জনকে সামান্য অবহেলায় জ্বলে উঠতে সাহায্য করে।
এটা বউকে রাগানোর জন্য বলেছে সে, নিজের বাপের বাড়ি থেকে পাঠানো জিনিস নিজের প্রিয় মানুষটিকে দেখানোর দ্বারা কণা নামের মেয়েটি আত্মতৃপ্তি লাভের জন্য এতটাই উন্মুখ ছিল যে, সে ঘুমন্ত স্বামীকে জাগাতে দ্বিধা করেনি। যদিও সে জানত না যে, মাহতাব ভোর চারটা পর্যন্ত কলেজের খাতা কেটেছে। জানলে সে ডাকত না অবশ্যই। আর জিনিসগুলো মাহতাবকে পরে দেখালেও যে চলত, এটা বোঝাতেই কাঁচা ঘুম ভাঙ্গাতে মাহতাব বউকে এই জ্বালা ধরানো কথাটি বলে।
ধন্যবাদ আপনাকে , আপনার শেষটাও অনেক মুগ্ধকর।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আমি হলে গল্পটা এভাবে শেষ করতাম-
মাহতাবের অতি শীতল কথাগুলো কণার ভিতরে কোথায় যেন ওলটপালট করে দেয়। সে মনের ভেতরে মুহুর্তেই জ্বলে উঠে, আবার দপ করেই নিভে যায়।
আহারে বেচারা, কাজের চাপে কী দশা!
আবেগে কান্ডজ্ঞান ভুলে যাওয়ায় নিজেকে শাসায় কণা,
বড় অন্যায় হয়ে গেছে!
উঠে যায় মাহতাবের দিকে-
কপালে হাত রেখে আস্তে করে বলে- স্যরি!
বাইরে তখন সকালের মিষ্টি রোদের সাথে শরতের মেঘের খুনসুটি!!
প্রচন্ড রাগ নিয়ে বউয়ের দিকে তাকায়। ঘুমজড়ানো লাল চোখ পিটপিট করে বউয়ের হাসিমুখ দেখে। আরো রাগ বাড়ে। বিছানার সামনের মেঝেতে পড়ে আছে জিনিসগুলো। বেশ বড়সড় একটি প্লাষ্টিকের ম্যাট, সাদা পলিথিনে ভর্তি আতপ চাল, কোরবানির গরুর গোশত- কিছু কাঁচা, হাড়িতে রান্না করাও দেখল বেশ খানিক। চোখ পুরোটা মেলে এগুলোর সাথে আচারের ডিব্বার পাশে মুড়ি এবং খইয়ের টিন দেখতে পেলো।
স্ত্রীর উচ্ছ্বসিত হাসিমুখ দেখে রাগটা গিলে ফেলল মাহতাব। কণার এলোমেলো চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, ‘আমাদের বিয়ে হয়েছে কত বছর বল তো? মা কি এখনো বোঝেন না তোমাকে ভালবাসার জন্য আমার কোন উপঢৌকনের প্রয়োজন নেই?’ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে বলে, ‘যাক, এসেই যখন গিয়েছে, তুমি বরং মাংসটা চাপিয়ে দাও। সারারাত ঘুমাইনি লক্ষ্মীটি, একটু ঘুমাই, আমি উঠে মাকে ফোন করে থ্যাঙ্ক ইউ জানাব’।
খুশি হয়ে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায় কণা। আসলেই খুশিতে মাহতাবের ঘুমের কথাটা একদম মনে ছিলোনা, ভীষণ ভুল হয়ে গিয়েছে! দুপুর তিনটা পর্যন্ত আর বাচ্চাদেরও ঐদিকে যেতে দেবেনা সে। ততক্ষণে মাহতাবের প্রিয় কাচ্চি বিরিয়ানী রান্না হয়ে যাবে। ঘুম থেকে উঠে কি সারপ্রাইজড’ইনা হবে সে!
ওদিকে স্ত্রীকে হাসিমুখে যেতে দেখে মাহতাবের মনটাও ভাল হয়ে যায়। আজ ঈদের দিন বকা দিলে মনটা খারাপ হত বেচারীর। শাশুড়ি যতই মনে করুন তাঁর উপহার উপঢৌকন তাঁর আহ্লাদী মেয়ের সংসার টিকিয়ে রেখেছে, সহজ সরল বৌটাকে সে আসলেই অনেক ভালোবাসে। একটু বোকা মেয়েটা, কিন্তু সে আসলেই মাহতাবকে অনেক ভালোবাসে। নিশ্চিত সে বাচ্চাদেরও আর দুপুর তিনটা পর্যন্ত এমুখো হতে দেবেনা। ভালোই হোল, এখন বারোটার পরিবর্তে তিনটা পর্যন্ত ঘুমোনো যাবে!
যাকে বলে পাকা রাঁধুনির হাত-
স্বাদই স্পেশ্যাল
জাযাকিল্লাহ খাইরান কাথিরা..
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সংসার জীবনের এসব খুনসুটি ভালবাসাকেই বাড়িয়ে দেয় যেন।
আপনার নান্দনিক লেখনী কষ্টময় অনুভূতির হীমশীতল স্রোতে ভাসিয়ে যায় কিছুটা!
আপনাকে "কষ্টময় অনুভূতির হীমশীতল স্রোতে ভাসিয়ে " নেবার জন্য আমিও কষ্টে ভেসে গেলাম।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার কাছে তাই মনে হয়?
আমি তো ভাই আপনার/আপনাদের কে আআম্র লিখায় ফুটিতে তুলতে কলম ধরি।
ধন্যবাদ সুন্দর অনুভূতি রেখে যাবার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
৫ এবং ৬ নং মন্তব্য/প্রতিমন্তব্য পড়লে মনে হয় সহজ হতে পারে।
ধন্যবাদ অনুভূতি রেখে যাবার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
যাকে বলে পাকা রাঁধুনির হাত-
স্বাদই স্পেশ্যাল
জাযাকিল্লাহ খাইরান কাথিরা..
ধন্যবাদ আপনাকে।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন